Monday, January 8, 2024

বর্ণমালা কবিতা : দুপুর মিত্র

বর্ণমালা কবিতা দুপুর মিত্র প্রথম প্রকাশ: জুলাই, ২০২২ বইটি বিক্রির জন্য নয়। কপিলেফ্ট। এই বইয়ের সমস্ত লেখা কপিলেফ্ট। এই বইটির যে কোন অংশ যে কেউ অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক উদ্দেশ্যে মূল লেখক ও লেখাকে অবিকৃত রেখে লেখক ও প্রকাশকের অনুমতি ব্যতিরেকেই যে কেউ নকল এবং পরিবেশন করতে পারবেন। এছাড়া বইটি ই -মেইলে লেখকের সাথে যোগাযোগ করে যে কেউ বিনামূল্যে সংগ্রহ করতে পাবেন। ই -মেইল ঠিকানা-mitra_bibhuti@yahoo.com প্রকাশক দুপুর মিত্র প্রচ্ছদ দুপুর মিত্র দূর লক্ষ্যের দর্শনভাবনা ‘কবিতার কী ও কেন’ নামে একটি বই পড়েছিলাম কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর। সেখানে তিনি যে অসামান্য বর্ণনা দিয়েছেন লেখা নির্মাণ পর্যায়ের, তাতে মনে হয়েছে তিনি আসলে কোনো কিছুকেই তাঁর হাতে রাখেননি। কোনো নিয়মে আটকে যাননি, কিংবা কোনোচিন্তা বা ব্যাখ্যাকেই শেকল পরাননি। তবে বাস্তবতার কথা, অসংখ্য নিয়মেরকথা, অনেক অনেক উচিত-অনুচিতের কথা, পরোক্ষে বললেও শেষ পর্যন্ত ব্যারিকেড তুলে দিয়েছেন। আবার বিখ্যাত কবিদের অনেকের ব্যাখ্যাই বলে- উপমাই কবিত্ব, চিত্রকল্পইকবিতা, প্রচলিত শব্দের নতুন বিন্যাসই কবিতা কিংবা নতুন ভাষানির্মাণের দক্ষতাই কবিতাকে উৎরে দেয়। আসলে শেষ পর্যন্ত কবিতার বেলায়কোন ব্যাখ্যাটি যে খাটে, তার কোনো সদুত্তর মেলে না। প্রতিনিয়ত প্রমাণিত হয় যে, কোনো সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত নয়, কোনো নিয়মই যথার্থ নয়। কবি, এমনই এক স্রষ্টা যার সৃষ্টির কোনো সাচ নেই; যার বলারকোনো মুখোশ নেই। যে কারণে অত আগে জীবনানন্দ দাশও বোধহয় হালছেড়েই বলেছিলেন- কবিতা অনেক রকম। আমি বলি, কবিতার কোনো রকমনেই। কবিতার কোনো জাত নেই। দুপুর মিত্রর একবই কবিতা পড়লাম বেশ কয়েকদিন ভরে। প্রতিটি কবিতাইএকটা নিয়মে বাঁধতে চেয়েছেন দুপুর। মানে এক একটি বর্ণমালা দিয়ে একটি কবিতা সাজাতে চেয়েছেন। অর্থাৎ কবি একটি নিয়ম রক্ষা করেছেন। নিয়মকে যেমন অনিয়ম করা যায়, তেমনি অনিয়মকেও তো নিয়মকরা যেতে পারে। ‘বর্ণমালার কবিতা’ নামে গ্রন্থের নামকরণ করা হয়েছে। সমকালীন কবিতায় এমন পারম্পর্য বা সাযুজ্য না থাকাটাই যখন বৈশিষ্ট্য হতে শুরু করেছে, তখন দুপুরের বইয়ের নামকরণের সঙ্গে ভেতরের কবিতা বিন্যাসের সরাসরি সম্পর্ক ঘটেছে। বলা যায়, একটি নিয়মতান্ত্রিক নামকরণই। যে বিষয়টি ভাবনার, সেটি হলো ‘বর্ণমালার কবিতা’র পুরো বইতে তেমন কোনো চমকে দেবার মতো চিত্রকল্প, উপমা বা মেটাফোর না থাকলেও এমন একটা ব্যাপার রয়েছে, যা পাঠককে ভাবাবে বা বইটি শেষ করতে অনুপ্রাণিত করবে। এর কারণ বোধকরি, দুপুর কবিতাগুলি জীবন থেকে তুলে এনেছেন, হৃদয় দিয়ে লিপিবদ্ধ করেছেন। অর্থাৎ বলতে চাই যে, সরাসরি ন্যারেটিভ কবিতাও পাঠকের মনোযোগ কাড়তে পারে, আবার বর্ণনার অভিনবত্বও পাঠকের প্রত্যাশার বাইরে নয়। দুপুর আমার ভীষণ পরিচিত এক কবিতাকর্মী, নিষ্ঠ পাঠক, আমার স্নেহভাজন, কবিতা লিখছেন দীর্ঘদিন ধরে। ওর এই কবিতার পরিভ্রমণের অভিজ্ঞতার ছাপ পড়েছে কবিতাগুলিতে। যে কারণে বর্ণনামুখ্য হলেও কবিতাগুলো আকর্ষণীয়। তাৎপর্যপূর্ণ। এর আর একটি কারণ ওর জীবনদর্শন। দর্শন ছাড়া আমরা এক পা-ও এগুতে পারি না। প্রতি পদক্ষেপে দর্শনের প্রয়োজন পড়ে। দুপুরের জীবনবাস্তবতা বা যাপন-অভিজ্ঞতার সঙ্গে দর্শন ভাবনার এক চমৎকার প্রকাশ ‘বর্ণমালার কবিতা’। ওর কবিতার ভাষাসময় দ্বারা বিবেচ্য, ঋজু ও মনোগ্রাহী। পাঠককে আপন করে নেবার মতো ঐশ্বর্যশালী। এই সব কিছু ঘিরে প্রতিটি বর্ণমালার অন্তরালে সংসার পেতেছে গ্রন্থবদ্ধ কবিতাবলী। 

 ওবায়েদ আকাশ ৩০/০৫/২০২২ 

 


বর্ণমালা কবিতা দুপুর মিত্র 

 ১. অ তে অস্থির কেন তোমার হৃদয়?

 আ তে আমাদের প্রত্যেকের ঘরেই দরজা আছে, 

 তবু গৃহবন্দী থাকতে হয়। 

 ২. ক তে কষ্টটাও জীবনের অংশ, কেবল সুখে থাকাটা জীবন নয়। 

 খ তে হেরে যাওয়াটাও খেলার অংশ, কেবল জিততে থাকলেই কী খেলা হয়? 

 গ তে গড়িয়ে গড়িয়ে জলে পাড় ভাঙা হলেই, নদীর নতুন পথের জয়। 

 ৩. জ তে জীবন যা অন্যের, তার সাথে তোমার জীবন কর না তুলনা। 

 কেননা তুমি সেই জীবনের ভবিষ্যৎ জান না।

 ঝ তে ঝড় এসে যে গাছ উপড়ে ফেলে যায়, সেই লম্বা গাছটি হয়ে ওঠা হয়ত স্বপ্ন ছিল অনেক গাছের ছায়ায়।

 ৪. ভ তে ভালবাসা কখনো শুধু নিকটে থাকা নয়, তারপরও ভালবাসা মনে হয় নৈকট্য প্রকাশের। 

 ম তে মেঘ কখনো আকাশের সাথে থাকে না, তারপরও মনে হয় মেঘ আকাশের। 

 ৫. প তে পেয়েছি, পেয়েছি তো বটেই, তবু পেয়েছি কি সব? 

ফ তে ফাল্গুন আসলেও পৃথিবীর সবখানে হয় না উৎসব। 

 ব তে বাস্তবতার চেয়ে আমাদের কষ্ট দেয় বেশি কল্পনা। 

 ভ তে ভাববে না তবে কি চাতক আকাশের দিকে চেয়ে, করবে না বৃষ্টিবন্দনা। 
 ৬. কাক কেন কা কা করে, কার কথা কয়, কথা কেন কড়া। খেয়ালে খেয়ালে খেয়া খুঁজে খড়কুটা, খ্যাপানো খরা। 

 ৭. লজ্জায় লালমুখ, লুকোচুরি লেখিকার। শিল্পপ্রতিভায় শিহরন, শিলীভূত শেফালিকার।

 ৮. অতটা ভাবিনি, ভাবিনি যে থেমে যাব।

 আমি তো পড়ছিলাম, জোরে জোরে, 
গত জীবনের পড়া। 
 ইস্কুলে শিক্ষকের কাছে হেসে হেসেই যাচ্ছিলাম পড়ে।
ঈগলের মত কে দেখছিল আমায়, কে জানত জীবনের সব অধ্যায় পড়া যায় না জোরে। 
 কোন কোন অধ্যায় পড়তে গেলে কান্না পায় অঝোরে।

 ৯. অন্ধকারকে ভয় পায় সবাই এটাই যেন স্বাভাবিক।
 আলোকেও ভয় পায় মানুষ, এটা কেন অস্বাভাবিক? 

 ১০. শেষমেষ একদিন সত্যি হবে, সত্যি হবে দেখ। 

 ষাঁড়ের মাথায় যে পাখি বসেছিল, তার কাছ থেকেও শেখ। 

 স্বপ্নে যে জিনিস দেখ, একদিন সত্যি তা তোমার সামনে আসবে,

 মনে পড়বে ভেবেই রেখেছিলে এতো।

 ১১. প্রকৃতির কোন যুক্তি থাকে না। 

 ফুল ফোটার নিয়ম নেই কোনো। 

 বারবার নদী কি একপথে যায় কখনো? 
 ভালবাসা কাউকে কাউকে পাগল বানায়। 
 মানুষই কেবল যুক্তি দিয়ে প্রকৃতি সাজায়। 

 ১২. ত তে তোমার মুখ নয়, তাকিয়ে দেখি সুন্দর হৃদয়। 
 থ তে থেকে থেকে যে প্রেমে মজে উঠি আমি, তা আর অন্য কোন কারনে নয়। 
 দ তে দেখ মনে করে তোমার মুখ এত উজ্জ্বল তা এই সুন্দর হৃদয়ের কারনে। 

 ১৩. ভ তে ভাষা নেই উদ্ভিদের, ভালবাসা পারে না প্রকাশ করতে। 
 তারপরও একটি উদ্ভিদ বড় হয় আরেকটি উদ্ভিদ নিয়ে।
 ম তে মানুষের ভাষা আছে, কতভাবে সে প্রকাশ করতে পারে ভালবাসা তারপরও মানুষের একা থাকতে হয়। তারপরও মানুষেরা একা থাকে। 

 ১৪. চ তে চোখ থেকে জল মুছে দেখ, স্মরণ কর অতীত। 
 ছ তে ছবি নয়, যখন মানুষ অতীত মনে করে না, অতীতের ঘটনা বাস্তবে ঘটে, করে তুলে ভীত। 

 ১৫. স তে সমুদ্র তোমাকে কাছে নিতে চায় কিন্তু তুমি তার কাছে যাও না 

হ তে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখ এর লোনাজল আর তাকিয়ে দেখ কিভাবে অন্য আরেজনকে সে টেনে নিচ্ছে তার কাছে। 

 ১৬. এ তে এই যে বিষণ্নতা, নিস্পৃহতা, থিতু হয়ে বসে থাকা এখনো। 

 ঐ তে ঐদিকে চেয়ে দেখ একবার, 

মাতৃগর্ভ থেকে যে হৃদপিণ্ড নেচে চলেছে সেই হৃদপিণ্ডের বিরাম নেই কোনো। 

 ১৭. অ তে অবেলাতেও ফুল ফুটে, আদতে ফুল ফোটার বেলা নেই কোনো। 

 আ তে আমাদের জন্য জন্ম হয় না আমাদের তবু আমাদের জন্যই কেটে যায়, অবেলাতেও অন্যকিছু ভাবি না কখনো। 

 ১৮. ভ তে ভালবাসা ভালবাসা কি শুধু প্রেমেই হয়? ব তে বন্ধুতা বন্ধুতা কি ভালবাসা নয়? 

 ১৯. প তে প্রয়োজন যা কিছু প্রয়োজন আমরা শুধু তাকেই চাষ করি 

ফুলে ফলে ভরে প্রয়োজনের উঠোন 

 অ তে অপ্রয়োজন যা কিছু অপ্রয়োজন তার দিকে ফিরেও তাকাই না 

একদিন নাইই হয়ে গেল অচেনা ফুলের ভুবন 

 ২০. গ তে গাছ গাছ নিয়ে একটি বাক্য হল গাছের শাখা বেয়ে ধীরে ধীরে হাঁটতে থাকা মথটিই একদিন প্রজাপতি হয়। 

 ফ তে ফুল ফুল নিয়ে একটি বাক্য ফুলের কাছে গিয়ে প্রজাপতি বলে কে বেশি সুন্দর আটকে থাকা তুমি না আমি মুক্ত বিশ্বময় 

 ২১. ঘ তে ঘুড়ি ঘুড়ি নিয়ে বাক্য হল 
একদিন ঘুড়িও কেটে যায় উড়তে উড়তে চলে যায় চলে যায় কোথায় জানে না শৈশব

 র তে রঙ রঙ নিয়ে বাক্য হল কিছু তবু রেখে যায় রেখে যায় শৈশবের রঙ সবকিছুই সবকিছুর সাপেক্ষে চলে যায়

 সবকিছুই সবকিছুর সাপেক্ষে রেখে যায় 

কিছু ভুল নয়, কেউ তবু থেকে যায়, যায় না তার পিছু

 ২২. দ বর্ণ দিয়ে একটি বাক্য দেখতে একই রকম হলেও চিনি আর লবণের স্বাদ আলাদা 

 ২৩. অ বর্ণ দিয়ে একটি বাক্য 
অন্য কারও সাথে কথা হোক বা না হোক 
 তোমার সাথে তো তোমার ঠিকই কথা হয় 

 অন্য কেউ বলতে পারুক বা না পারুক

 তুমি তো পার বলতে 
তোমাকে কিভাবে চুমু খেতে হবে সময়। 

 ২৪. শ তে শহর শহর নিয়ে বাক্য 

শহরে তেমন কোন ডাল পালা নেই গাছ নেই

 পাখিরা তাই বিদ্যুতের তারে বসে কখনো কখনো পাখিরা বিদ্যুতের তারে ঝুলে থাকে 
এক একটা লাশ হয়ে 

 ২৫. ব তে বটগাছ বটগাছ নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ 

 আমাদের বাসায় একটি বটগাছ লাগিয়েছি বটগাছটি বড় হচ্ছে। 

ও আমাকে দেখছে। একদিন ও আমার মৃত্যুও দেখবে। ও আমার সন্তানদের দেখবে। 

আমার সন্তানদের সন্তানদের দেখবে। বটগাছটির কাছে আমাদের পরিবারের সব ইতিহাস জানা থাকবে। কিন্তু বটগাছটি কাউকে কিছুই বলতে পারবে না। 

 ২৬. গ তে গাছ গাছ নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ হলো- গাছেদের বীজ থাকে। 

বীজের অঙ্কুরোদগম হয়। বীজপত্র বীজমূল হয়। চারা হয়। চারা থেকে গাছ হয়। ফুল হয়। পরাগায়ন হয়। ফল হয়। আবার বীজ হয়। চারা হয়। গাছ হয়। এটাই জীবন। জীবনের রহস্য।

 ২৭. স তে সূর্য সূর্য নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ সূর্য জানে তার আলোতেই উদ্ভিদ শর্করা তৈরি করে এবং তা খেয়ে সকল প্রাণি জগত বেঁচে থাকে। এজন্যই প্রতিদিন সকালবেলায় নিয়ম করে সূর্য আসে ঘরে। তারপর নিয়ম করে ঘুমুতে যায়। 

 ২৮. ভ তে ভালবাসা ভালবাসা নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ যখন কাউকে ঘৃণা করি ভালবাসাও কি হারিয়ে যায় বুকে হাত দিয়ে ঘৃণা যত দেখি হৃদস্পন্দন কোন বাজনা বাজায়? 

 ২৯. ম তে মাছ মাছ নিয়ে একটি বাক্য মাছের চোখে পাতা নেই মাছ তবু চোখ বুজে অনুভব করে পৃথিবীটা কত সুন্দর। 

 ৩০. ম তে মেঘ মেঘ নিয়ে একটি বাক্য মেঘ জানে না সে কাল হলেও তার ওপর আলো পড়েই রঙধনু হয়। 





 ৩১. চ তে চাঁদ চাঁদ নিয়ে একটি বাক্য যে সূর্যের আলোতে চাঁদ সুন্দর সেই সূর্যের সাথে চাঁদের কখনো দেখা হয় না। 

 ৩২. ঘ তে ঘ্রাণ ঘ্রাণ নিয়ে একটি বাক্য সব ভাষা বুঝতে শব্দ লাগে না যেমন ঘ্রাণ। 

 ৩৩. ল তে লবণ লবণ নিয়ে একটি বাক্য রোদের তাপে সমুদ্রের জল উড়ে গেলেও পড়ে থাকে লবণ। 

 ৩৪. ম তে মানুষ মানুষ নিয়ে একটি বাক্য মানুষ আসলে কিছু হারায় না একটির বদলে আরেকটি পায়। 

 ৩৫. স তে সমুদ্র সমুদ্র নিয়ে একটি বাক্য সমুদ্র কখনো গর্জন দেয় না তারপরও আমরা সমুদ্রের কাছে গেলে গর্জন শুনতে পাই। 

 ৩৬. হ তে হাঁটা হাঁটা নিয়ে একটি বাক্য মানুষ হাজার হাজার মানুষের সাথে হাঁটলেও ভেতরটা একা থাকলে নিজেকে একাই মনে করে। 

 ৩৭. হ তে হাত হাত নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ। মানুষের দুই হাতের শক্তি কখনই সমান থাকে না। অধিকাংশ মানুষের ডান হাতে বেশি শক্তি থাকে। কিছু কিছু মানুষের বা হাতের। তারপরও মানুষের দুই হাতই প্রয়োজন হয়। একটা তেমন প্রয়োজনীয় নয় বলে কেটে ফেলে দেয় না। 

৩৮. গ তে গাছ গাছ নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ গাছের প্রধান মূল থাকে। শাখা মূল থাকে। এসব মূল দিয়ে সে মাটির সাথে আকড়ে থাকে। পরম যত্নে সে মিশে থাকে মাটির আদরে। কোন কারনে মূল মাটি থেকে সরে গেলেই গাছ মরে যায়। কোন দিন ফিরে আসে না আর। 

 ৩৯. স তে সূর্যমুখী সূর্যমুখী নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ সূর্যমুখী সূর্যের দিকে মুখ করে ফুটে। সূর্যের মত করে সাজে। সূর্যের দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকে সারাজীবন। অথচ সূর্য সূর্যমুখীকেই চেনে না। 

 ৪০. ম তে মাঠ মাঠ নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ মাঠ সারারাত শুয়ে থাকে। একটুও নড়চড় করে না। দিনের বেলায় প্রখর রোদের তাপেও মাঠ নিশ্চুপ থাকে। বিকাল বেলা সব ছেলে মেয়েরা ওর উপর খেলে। মাঠ একটুও নড়ে না। সেভাবেই শুয়ে থাকে। মাঠের উপর সবাই খেলে। কিন্তু কোনদিন মাঠ খেলে না। 

 ৪১. খ তে খোঁজা, খোঁজা নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ। আমরা অনেক সময় বিভিন্ন জিনিসই নানা কারনে খুঁজে থাকি। কোথায় দেখেছি, কোথায় রেখেছি এমন ভাবতে থাকি। প্রায়ই খোঁজা জিনিসটা আমরা পেয়ে যাই। আর ভাবি এত সহজেই পেয়ে গেলাম। আসলে সহজে পাই কারন খোঁজা জিনিসটিও আমাদের খুঁজে। 

 ৪২. আ তে আমি আমি নিয়ে অনুচ্ছেদ সেভাবেই আছি আমি, যেরকম দেখে গেছ অনেক বছর আগে। তোমার চলে যাওয়াটা যদি তোমার স্বাধীনতা হয়। তাহলে তোমাকে ছেড়ে একা থাকাটাও আমার স্বাধীনতা। 

 ৪৩. ক তে ক্লান্তি ক্লান্তি নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ। আমার এখন ক্লান্তি লাগে। সবকিছুতেই ক্লান্তি লাগে। ঘুম থেকে উঠতে ক্লান্তি লাগে। বাগানে ঘুরতে, নানা রঙের ফুটন্ত ফুল দেখতে, ঘুরে বেড়াতে, কাউকে ভালবাসতে। সবকিছুতেই ক্লান্তি লাগে। অথচ এত ঝড়, বৃষ্টি, মেঘ, রোদ ; তারপরও আকাশের ক্লান্তি নেই কোন। আকাশ যেমন ছিল, তেমনই আছে। 

 ৪৪. ব তে বৃষ্টি বৃষ্টি নিয়ে অনুচ্ছেদ বৃষ্টির জল একবারে পড়ে শেষ হয় না। কখনো কখনো মুষলধারে বৃষ্টি হয়। একবার থামে আবার নামে। কখনো কখনো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। অনেকক্ষণ ধরে চলতে থাকে। কখনো কখনো টানা সাত দিন বা তার বেশিও বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি শেষ হলেই হাসতে থাকে গাছপালা। 

 ৪৫. ন তে নদী নদী নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ নদীর জল স্বচ্ছ। আয়নার মতন। নদীর জলের দিকে তাকালে নিজেকে দেখা যায়। নদীর জলে ঢেউ খেলা করে। ঢেউয়ের সাথে হেলতে দুলতে থাকে তাকিয়ে থাকা মুখ। নদীর এই আয়না কখনো ভাঙে না।

 ৪৬. প তে পাখি পাখি নিয়ে একটা অনুচ্ছেদ পাখিরা সুন্দর করে খড়কুটো দিয়ে বাসা বানায়। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে খাবারের সন্ধানে। এসময় সে খড়কুটোও সংগ্রহ করে। পাখায় ভর করে নানা জায়গায় যায়। বাসা বানানোর পর আর কোথাও খড়কুটো সংগ্রহ করে না। পাখিরা তার পাখাও ভেঙে ফেলে না। কারন বাসা ভেঙে গেলে তাকে আবার দূর দূরান্তে যেতে হবে। 

 ৪৭. ঘ তে ঘর ঘর নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ আমি আমার ঘর সাজিয়ে রাখি। ঘরের ভেতর অনেক ফুলের গাছ লাগিয়েছি। ফুল ধরেছে। ফুলে ফুলে উড়ে বেড়াচ্ছে প্রজাপতি। পাখি বাসা বানিয়েছে ঘরে। খুব ভোরে ওদের ডাকে ঘুম ভাঙে আমার। সারাদিন পাহাড় থেকে রোদ আসে। নদী থেকে আসে বাতাস। আমার ঘরের ছাদ বানিয়েছি আকাশ দিয়ে। সেখানে মাঝে মাঝে মেঘ জমে। সেই মেঘ থেকে ঝরে বৃষ্টি। রোদ বৃষ্টির খেলা চলে দিনরাত। আমার ঘরটি কি স্বর্গ নয়? 

 ৪৮. দ তে দুঃখ দুঃখ নিয়ে একটি বাক্য দুঃখ ছাড়া সুখ বুঝা অসম্ভব; অতএব যার জীবনে দুঃখ নেই, তার জীবনে সুখও নেই। 

 ৪৯. ছ তে ছবি ছবি নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ আমরা ফুলের সাথে থেকে ছবি তুলি। অথবা কোন সুন্দর গাছ বা ভবন। আমরা হাসি মুখে ছবি তুলি অথবা হাসিহাসি মুখে। তারপর তোলা ছবির দিকে তাকিয়ে দেখি নিজেকে। কতটা তুলতে পারল ছবিটা আমাকে। তারপর আরও একটা তুলি। তারপর আরও একটা। এভাবে তুলতেই থাকি। কোন ছবিই আর আমাদের ভাল করে তুলতে পারে না। তরপর কোন একটা তুলনামূলক ভাল ছবি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকি। 

 ৫০. ভ তে ভালবাসা ভালবাসা নিয়ে একটি অনুচ্ছেদ ভালবাসা দেখে দেখে শেখা যায় না৷ ভালবাসা কারও মতন হয় না। কে কখন কাকে ভালবাসে তাও বলা যায় না। ভালবাসা কেউ লুকিয়েও রাখতে পারে না। কেননা ভালবাসা কেবল মন থেকে আসে।